কাঠের চিত্রিত হাতি ঘোড়া মমীপুতুল
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্পের মধ্যে সোনারগাঁয়ের এক কাঠের উপর খোদাই ফরমে করা মানুষ ও পশুর চিত্রিত খেলনা প্রাচীনতম ঐতিহ্যের ধারক। এই খেলনাগুলোতে সাধারণত একটি নির্ধারিত মাপের কাঠের টুকরো খোদাই করে পুরুষ, মহিলা ও প্রাণীর আকৃতি প্রদান করা হয়। এরপর এগুলো সাদা খড়ি মাটির প্রলেপ দিয়ে রঙ করা হয়। শুকনো সাদা রঙের উপর তুলি দিয়ে নানা রঙয়ের প্রলেপ দেওয়া হয়। শিল্পী খেলনাগুলোকে রাজা অথবা সৈনিক, রাণী অথবা গ্রাম্য বধু, বাঘ, হাতি, ঘোড়া ইত্যাদি রূপে উপস্থাপন করেন। এই সকল খেলনায় রঙ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ঐতিহ্যবাহী লোকজ ধারাকে যথার্থভাবে অনুসরণ করতে দেখা যায়। এতে সাধারণত লাল, কালো,হলুদ এবং সাদা রঙ এর ব্যবহার হয়ে থাকে।
সোনারগাঁয়ের কাঠের পুতুলের বৈশিষ্ট হচ্ছে এর নান্দনিক সৌন্দর্য। ঢাকা থেকে ২৫ কি: মি: উত্তর পূর্বদিকে ঢাকা মেঘনা মহাসড়ক থেকে দু কিলোমিটার দূরে সোনারগাঁ উপজেলা সংলগ্ন একটি গ্রামে মাত্র দু’টি পরিবার যারা এখনও পূর্ব পুরুষের হাত ধরে বেড়ে উঠা ঐতিহ্যকে ধারণ করে টিকে আছেন। এই শিল্পীরা খেলনাগুলোর সম্মুখভাগ খোদাই করে তাতে রঙের প্রলেপ দিয়ে থাকেন। এই খেলনাগুলো প্রাচীন মিশরীয় মমীর আদলে অলঙ্করণ করা হয়ে থাকে। অদ্যাবধি এই বিষয়টি স্পষ্ট নয় যে, এই ধারাটি মিশরীয় সভ্যতার সাথে আদৌ সম্পৃক্ত কিনা। সোনারগাঁয়ে তৈরি বর্ণিল খেলনাগুলো বাংলাদেশের অত্যন্ত মূল্যবান পুরনো ঐতিহ্য।